কোন বিধর্মীকে কষ্ট দিয়েন না !

আমি বিভিন্ন সময় দেখেছি অনেকে খৃষ্টান ও হিন্দু ধর্ম নিয়ে নানান রকম বাজে মন্তব্য করেন । অনেকে হাসি ঠাট্টা, বিদ্রুপ করেন। আবার বড় মুখ করে বলেন আমরা মুসলমান।

অনেকে আমার নিজেদের কতৃত্ব প্রকাশের জন্য এদের উপর অমানবিক নির্যাতন করি।।


আমি ধিক্কার জানাই তাদেরকে !

কাউকে বা কোন ধর্মকে উপসাহ করার শিক্ষা ইসলাম দেয়নি ।

ইসলাম অর্থ শান্তি ।

একটি মুসলিম দেশে ইসলাম মুসলিমকে শুধু অমুসলিমদের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করতেই বলে না, রাষ্ট্রে তাদের সার্বিক নিরাপত্তা এবং সুখ-সমৃদ্ধিও নিশ্চিত করে। পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহয় একাধিক স্থানে অমুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকার তুলে ধরা হয়েছে।

অমুসলিমরা নিজ নিজ উপাসনালয়ে উপাসনা করবেন। নিজ ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মালয়কে সুরক্ষিত রাখবেন। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে তারা সমান। তাদের প্রতি কোনো প্রকার বৈষম্য ইসলাম বরদাশত করে না।

যেসব অমুসলিমের সঙ্গে কোনো সংঘাত নেই, যারা শান্তিপূর্ণভাবে মুসলিমদের সঙ্গে বসবাস করেন তাদের প্রতি বৈষম্য দেখানো নয়; ইনসাফ করতে বলা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

‘আল্লাহ নিষেধ করেন না ওই লোকদের সঙ্গে সদাচার ও ইনসাফপূর্ণ ব্যবহার করতে যারা তোমাদের সঙ্গে ধর্মকেন্দ্রিক যুদ্ধ করে নি এবং তোমাদের আবাসভূমি হতে তোমাদের বের করে দেয় নি। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদের পছন্দ করেন। {সূরা আল-মুমতাহিনা, আয়াত : ৮}

‘তারা আল্লাহ তা‘আলার বদলে যাদের ডাকে, তাদের তোমরা কখনো গালি দিয়ো না, নইলে তারাও শত্রুতার কারণে না জেনে আল্লাহ তা‘আলাকেও গালি দেবে, আমি প্রত্যেক জাতির কাছেই তাদের কার্যকলাপ সুশোভনীয় করে রেখেছি, অতঃপর সবাইকে একদিন তার মালিকের কাছে ফিরে যেতে হবে, তারপর তিনি তাদের বলে দেবেন, তারা দুনিয়ার জীবনে কে কী কাজ করে এসেছে’। {সূরা আল আন‘আম, আয়াত : ১০৮}


কোনো মুসলিম যদি কোনো অমুসলিমের প্রতি অন্যায় করেন, তবে রোজ কিয়ামতে খোদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বিপক্ষে লড়বেন বলে হাদীসে এসেছে। একাধিক সাহাবী থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,-

‘সাবধান! যদি কোনো মুসলিম কোনো অমুসলিম নাগরিকের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে তার অধিকার খর্ব করে, তার ক্ষমতার বাইরে কষ্ট দেয় এবং তার কোনো বস্তু জোরপূর্বক নিয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার পক্ষে আল্লাহর দরবারে অভিযোগ উত্থাপন করব।’ [আবূ দাঊদ : ৩০৫২]

‘যে মুসলিম কর্তৃক নিরাপত্তা প্রাপ্ত কোনো অমুসলিমকে হত্যা করবে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ তার ঘ্রাণ পাওয়া যায় চল্লিশ বছরের পথের দূরত্ব থেকে’। [বুখারী : ৩১৬৬

এছাড়াও মহানবী (সঃ) তার বিদায় হজ্বের ভাষণে বলেছেন -

=> সাবধান! ধর্ম সম্বন্ধে বাড়াবাড়ি করো না। এই বাড়াবাড়ির ফলে তোমাদের পূর্ববর্তী বহু জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে।

=> তোমরা ধর্মভ্রষ্ট হয়ে পরস্পর পরস্পরের সংগে ঝগড়া ও রক্তপাতে লিপ্ত হয়ো না। তোমরা পরস্পর পরস্পরের ভাই।

=> এক দেশের মানুষের উপর অন্যদেশের মানুষের তথা অনারবদের উপর আরবদের এবং আরবদের উপর অনারবদের প্রাধান্যের কোন কারণই নাই। সমস্ত মানুষ এক আদম থেকে এবং আদম মাটি থেকে সৃষ্টি। মানুষের প্রাধান্য পাবে তাকওয়ার ভিত্তিতে।

সেখানে কোন সাহসে আপনি অন্য ধর্মকে নিয়ে পরিহাস করেন ?

আবার নিজেকে মুসলমান হিসাবে দাবী করেন !

ধিক্কার জানাই আপনাদের, যারা মুসলমান হয়েও কুরআন-সুন্নাহ্ থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখে নামধারীি হুজুরের বক্তব্যকে বেশি মুল্যায়ন করে।



এবার বলি অন্য কথা....
যেখানে খৃষ্টান ও হিন্দু ধর্ম গ্রহন্তে যেখানে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ও মহানবী (সঃ) এর গুনকিত্তন করা হয়েছে, যা শুনলে আপনি ও অবাক না হয়ে পারবেন না।

সেখানে কোন সাহসে আপনি তাদের ধর্মকে নিয়ে পরিহাস করেন ?


কিছু উদাহরন আমি আপনাদের কাছে তুলে ধরছি।

হিন্দু আল্লাহ ও মহানবী (সঃ) এর অস্তিত্বঃ

১.ভবিষ্য পুরাণে মুহাম্মদ (সঃ) –
¤ এতস্মিন্নন্তিবে সেত্দচ্ছ আচার্যেন সমন্বিতঃ

মহামদ ইতিখ্যাতঃ শিষ্যশাখা সমন্বিত নৃপশ্চৈব মহাদেবং মরুস্থল নিবাসিম্ম।
চন্দনাদিভির ভ্যর্চ্য তুষ্টাব মনসাহরম্ন মস্তে গিরিজানাথ মরুস্থল নিবাসিনে।
ক্রিপুবাসুরনাশা য় বহুমায়া প্রবর্তিনে স্নেচ্ছৈর্গপ্তা য়শুদ্ধায় সচ্চিদানরুপিণে।
ত্বং মাং হি কিংকরং বিদ্ধি পরণার্থমু পাগতম।

সূত্রঃ ভবিষ্য পুরাণে-৩:৩:৩, ৫-৮ শ্লোক

ভাবানুবাদঃ "যথাসময়ে'মহামদ'নামে একজন মহাপুরুষ আবির্ভূত হবেন যাঁর নিবাস"মরুস্থল"(আরব দেশে) সাথে স্বীয় সহচারবৃন্দও থাকবেন। হে মরুর প্রভু!
হে জগতগুরু আপনার প্রতি আমাদের স্তুতিবাদ। আপনি জগতের সমুদয় কুলষাদি ধ্বংসের উপায় অবগত আছেন।আপনাকে প্রণতি জানাই। হে মহাত্ম! আমরা আপনার দাসানুদাস। আমাদেরকে আপনার পদমূলে আশ্রয় প্রদান করুন।"

২.কৃষ্ণ দ্বৈপায়ণ বা বেদব্যাস রচিত ভবিষ্য পুরাণে কল্কি অবতারের (মুহাম্মদ সাঃ) বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে বলা হয়েছেঃ

"লিঙ্গচ্ছেদী শিখাহীনঃ

শ্মশ্রুধারী সে দূষকঃ
উচ্চালাপী সর্বভক্ষী ভবিষ্যতি জমোমম \\২৫\\
বিনা কৌলংচ পশবস্তেষাং ভক্ষ্যা মতা মম। মুসলেনৈব সংস্কারঃ কুশৈরিব ভবিষ্যতি \\২৬\\
তম্মান্মুসলবন্তো হি জাতয়ো ধর্ম্ম দূষকাঃ। ইতি পৈশাচধমশ্চ ভবিষ্যতি ময়াকৃতঃ

সূত্রঃ ভবিষ্য পুরাণ\\ শ্লোকঃ ১০-২৭।

অর্থঃ "আমার অনুসরণকারী লিঙ্গের ত্বকছেদন (খতনা) করিবে। সে শিখাহীন (মাথায় টিকিহীন) ও দাড়ি বিশিষ্ট হইবে; সে এক বিপ্লব আনয়ন করিবে। সে উচ্চস্বরে প্রার্থনা ধ্বনি (আজান) করিবে। সে সর্ব প্রকার ভক্ষ্যদ্রব্য (হালাল দ্রব্য) আহার করিবে; সে শূকর মাংস ভক্ষণ করিবে না। সে তৃণলতা দ্বারা পূত পবিত্র হইবে। ধর্মদ্রোহী জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিয়া সে মুসলমান নামে পরিচিত হইবে। আমার দ্বারা এই মাংসহারীদের ধর্ম স্থাপিত হইবে।"

৩.সামবেদে মুহাম্মদের (দঃ) পরিচয় বর্ণনা করে বলা হয়েছে -

যার নামের প্রথম অক্ষর 'ম'এবং শেষ অক্ষর 'দ' হবে এবং গো মাংস খাওয়ার আদেশ দিবেন, সেই দেবতাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় দেবতা।

"মদৌ বর্তিতা দেবা দকারান্তে প্রকৃত্তিতা। বৃষানাং বক্ষয়েত্ সদা মেদা শাস্ত্রেচস্মৃতা" সামবেদ সংহিতা।

অর্থঃ"যে দেবের নামের প্রথম অক্ষর "ম" ও শেষ অক্ষর"দ"এবং যিনি বৃষমাংস (গরুর মাংস) ভক্ষণ সর্বকালের জন্য পুনঃ বৈধ করিবেন, তিনিই হইবেন বেদানুযায়ী ঋষি।"

৪.উত্তরণ বেদে বলা হয়েছেঃ

"লা-ইলাহা হরতি পাপম ইল্লা ইলহা পরম পদম জন্ম বৈকুন্ঠ অপ সুতি তজপি নাম মুহামদম।

"সূত্রঃ উত্তরণ বেদ। আনকাহি, পঞ্চম অধ্যায়।

অর্থঃ"লা ইলাহা কহিলে পাপ মোচন হয়। ইল্লাল্লা কহিলে উচ্চ পদবী যদি চিরতরে স্বর্গে বাস করিতে চাও, তবে মোহাম্মদ নাম জপ কর।"

৫.অল্লোপনিষদের সপ্তম পরিচ্ছেদে কল্কি অবতারের কথা বলা হয়েছেঃ

"হোতার মিন্দ্রো হোতার মিন্দ্রো মহাসুরিন্দ্রাঃ ।
অল্লো জ্যেষ্ঠং শ্রেষ্ঠং পরমং পূর্ণং ব্যক্ষণং অল্লাম।
অল্লো রসূল মহামদ রকং বরস্য অল্লো অল্লাম।
আদল্লাং বুকমেকং অল্লাবুকংল্লান লিখার্তকম।

"সূত্রঃ অল্লোপনিষদের সপ্তম পরিচ্ছেদ।

অর্থঃ অল্লোপণিষদ দেবতাদের রাজা আল্লাহ আদি ও সকলের বড় ইন্দ্রের গুরু । আল্লাহ পূর্ণ ব্রহ্ম , মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল । পরম বরণীয় আল্লাহই । তাঁর অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আর কেউ নেই । আল্লাহ অক্ষয় , অব্যয় , স্বয়ম্ভু ।


খৃষ্টান ধর্মে আল্লাহ ও মহানবী (সঃ) এর অস্তিত্বঃ

বাইবেলেও অসংখ্যবার হুজুর (সাঃ) এর কথা বলা হয়েছে।

ওল্ড টেষ্টামেন্টে বুক অফ ডুইট্রনমি অধ্যায় ১৮, ভার্স নাম্বার ১৮ তে, আল্লাহ তায়ালা মূসা (আঃ)-কে বলছেন, "আমি তোমার ভ্রাতাদিগের মধ্য থেকে আরেকজন নবী আনবো যে হবে তোমারি মতন। আর সে নিজে কিছু বলবেনা, আমি যা তাকে বলতে বলবো সে শুধু তাই বলবে।"

বুক অফ আইজাহা অধ্যায় ১৯ ভার্স নাম্বার ১২, তে বলা হয়েছে, "এবং কিতাবখানি নাযিল করা হবে তাঁর উপর যিনি নিরক্ষর। তাকে বলা হবে পড় তোমার প্রভুর নামে, সে বলবে আমি তো পড়তে জানিনা, আমি নিরক্ষর।"

.............

এখনো সময় আছে, নিজেকে জানুন !

সিদ্ধান্ত আপনার !!

যা কিছু করার আপনাকেই করতে হবে ! ! !


বিদ্রঃ একজন মুসলমান হিসাবে নিজের দায়বদ্ধতা থেকে এই পোষ্টটি দিলাম। জানি অনেকেই পড়বেন না। তবু যদি ১জনও এই পোষ্টটা পড়েন তাকে জানাচ্ছি আন্তরিক ধন্যবাদ।।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন