পেয়েও হারানোর গল্প‬


-হ্যালো !
-হ্যা, বল;
-কি ব্যাপার তোর ফোন বন্ধ ছিলো ক্যান ?
-না, এমনিতেই;
-আচ্ছা কি হয়েছে তোর ? আমাকে বলবি তো;
-বললাম না কিছু হয় নি ! এ জন্যই তোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করে না;

(ফোনের অপর প্রান্ত থেকে দীর্ঘশ্বাস শোনা যায়)
-কি হলো চুপ ক্যান; কিছু বলবি ?
-না, এমনিতেই; তুই কেমন আছিস জানার জন্য ফোন দিলাম।
-আমি ! ভালো আছি, আর কিছু ?
-না;
-ঠিক আছে, তাহলে ফোন রাখ;
-আচ্ছা; ভালো থাকিস....
এই বলে ফোন কেটে দিল দিগন্ত।
দু'চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে তার। কোনো ভাবেই নিজেকে সামলে রাখতে পারছে না দিগন্ত। অনেক ভালোবাসে সে চারুলতা। কিন্ত, চারুলতা এখন আর ভালোবাসেনা তাকে।
একটা সময় ছিলো এই চারুলতাই পাগলের মতো ভালোবাসতো দিগন্তকে। আর দিগন্ত, কোনো পাত্তাই দিত না মেয়েটিকে।
আজ এতগুলো দিন পর, খুব বেশি ফেলে আসা দিনগুলোর কথা মনে পরছে দিগন্তের।
ছোটো বেলা থেকেই এক সাথে বড় হয়েছে চারুলতা আর দিগন্ত। এখন তারা একই ভার্সিটিতে পড়ে।
দিগন্তের আজ তিন বছর আগের সেই দিনটার কথা মনে পরছে।
সেদিন এক পরন্ত বিকালে চারুলতা তার ভালোবাসার কথা বলেছিল দিগন্তকে। আর, উত্তরে এক গাল হেসে দিগন্ত বলেছিল;" চারু আমরা শুধুই ভালো বন্ধু, এর বেশি আর কিছুই নই"।
সেদিন অনেক কেঁদে ছিলো চারুলতা। সেদিনের পরেও অনেক বার চারুলতা তার ভালোবাসার কথা জানিয়েছে দিগন্তকে। আর দিগন্ত বার বারই ফিরিয়ে দিয়েছে তাকে।
এই তো মাত্র কিছু দিন আগ, যেদিন ছেলেপক্ষ চারুলতাকে দেখতে আসে, সেদিন সকালেই সে ফোন দিয়েছিল দিগন্তকে.....
-হ্যালো; দিক !
-হ্যা, কি হয়েছে তোর ? কাঁদছিস ক্যান !
-আজ বাবার বন্ধু তার ছেলের জন্য দেখতে আসছে আমাকে; কি করবো আমি ?
-দেখ চারু আমি তোকে আগেই বলেছি, আমরা শুধুই বন্ধু; ছেলে পছন্দ হলে বিয়ে করবি আর কী করবি !
-কিন্ত.....
-কিন্ত কি ?
-না কিছু না...
এই বলে সেদিন ফোন রেখে দিয়েছিল চারুলতা।
দুই দিন পর চারুলতার কাছ থেকেই জানতে পারে দিগন্ত; ছেলেপক্ষ আংটি পড়িয়ে গেছে তাকে, চার মাস পরে ওর পরীক্ষার পরেই বিয়ে।
সেদিন এর পর থেকে দিগন্তের কি হলো সে নিজেই জানে না। ক্যাম্পাস, বন্ধুদের আড্ডা কোনো কিছুই ভালো লাগে না তার ।সব সময়ই শুধু চারুলতার কথা মনে পড়ে।
আর, চারুলতা আগের মতো কথা বলেনা দিগন্তের সাথে।
দিগন্ত এখন ভালোকরেই বুঝতে পারছে, চারুলতার সাথে তার বন্ধুক্তে সম্পর্ক ছিলো না, ছিলো আত্মার সম্পর্ক, ছিলো ভালোবাসার সম্পর্ক।
কিন্ত দিগন্ত এখন শত চেষ্টা করেও চারুলতাকে তার ভালোবাসার কথা বলতে পারছে না। আর, চারুলতাও এখন তার কাছ থেকে শুনতে চায় না সেই না শোনা কথা।
চারুলতা আর দিগন্ত কেউই জানে না কি তাদের পরিনতি......

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন