NID Card হারিয়ে গেলে কি করবেন ?



আমরা সবাই ভাল করেই জানি আমাদের জাতীয় পরিচয় পত্র টি আমাদের কত প্রয়োজনীয় একটি ডকুমেন্টস। এত জরুরী ডকুমেন্টস হওয়া সত্ত্বেও অনেক সময় অজ্ঞাত কারণে হারিয়ে যায়,  বা নষ্ট হয়ে যায়, অথবা ছিনতাইকারীরা অন্যান্য জিনিসপত্রও ছিনতাই করে নিয়ে যায়। আপনি যদি এরকম কোন সমস্যার মধ্যে পড়ে থাকেন তাহলে আমি আজকে এই টিউটোরিয়াল এর মাধ্যমে আপনাকে সমাধান দিব।

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রটি কি হারিয়ে গেছে? ভুলবশত কোথাও রেখে এসেছেন? নষ্ট হয়ে গেছে? নাকি ছিনতাইকারীরা অন্যান্য জিনিসের সাথে ছিনতাই করে নিয়ে গেছে? এরকম যেকোন সমস্যার কারণে যদি আপনার এনআইডি কার্ডটি না থাকে তাহলে আপনি সহজেই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র রি-ইস্যু জন্য আবেদন করে নতুন কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

খুব সহজেই জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ডটি যেভাবে রিসিভ করবেন বা ডুব্লিকেট কপি উঠাবেন তার সম্পূর্ণ গাইড লাইন আমি নিচে দিয়ে দিচ্ছিঃ

NID Card হাড়িয়ে গেলে কি করনীয়ঃ

জাতীয় পরিচয় পত্র যদি হারিয়ে ,বা নষ্ট হয়ে যায় তাহলে প্রথমেই আপনাকে নিকটস্থ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে হবে। অতঃপর উক্ত সাধারণ ডায়েরির রিসিভ কপিটা নিয়ে আপনি নিজে নিজে অথবা কারো সাহায্য নিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। কিভাবে অনলাইনে আবেদন করবেন? কিভাবে জিডি করবেন? সমস্ত কিছু আমি এই টিউটোরিয়াল এর মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছি।

কিভাবে থানায় সাধারণ ডায়েরী/GD করব?

প্রথমে একটি সাদা কাগজে একটি সাধারণ ডায়েরি করবেন, অতঃপর উক্ত সাধারণ ডায়েরি আপনার স্বাক্ষরযুক্ত করে দুইটি কপি নিয়ে নিকটস্থ থানায় গিয়ে ডিউটি অফিসার কে দিবেন এবং একটি করিয়ে সাথে করে নিয়ে আসবেন। উক্ত সাধারণ ডায়েরির ফরমটিতে অবশ্যই জিডি নম্বর, ডিউটি রত অফিসারের নাম, সীল, স্বাক্ষর,  এবং জিডির তারিখ উল্লেখ থাকবে।

সাধারণ ডায়েরী/GD- এর নমুনা কপি এখান থেকে ডাউনলোড করুনঃ

কিভাবে সাধারণ ডায়েরি লিখবেন যদি কোন ধারণা না পান তাহলে আমি নিম্নে একটি নমুনা কপি দিয়ে দিচ্ছি এটা, jpg, PDF, Documents/Doc File ডাউনলোড করতে পারবেন। এবং এটি এডিট করে আপনার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্র হারানো সাধারণ ডায়েরির নমুনা কপিঃ

NID GD Formate Download
NID GD Formate Download

জাতীয় পরিচয় পত্র হারানো সাধারণ ডায়েরীর Doc ফাইলটি ডাউনলোড করুন।

NID Haranu GD formate

কি কি কাগজ লাগবে?

জাতীয় পরিচয় পত্র রি-ইস্যুর জন্য কোন প্রকার তথ্য প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র জিডির কপি দিলেই হবে। তবে সাধারণ ডায়েরীর ফরমটি স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে সত্যায়িত করলে সবচেয়ে ভালো হয়। সত্যায়িত না করলেও কোন সমস্য নেই।

কত টাকা খরচ হবে?

সাধারনত 230 টাকা লাগে। যদি স্মার্ট কার্ড এর জন্য আবেদন করেন অথবা জরুরী ভিক্তিতে পাওয়ার জন্য আবেদন করেন তাহলে একটু বেশি লাগতে পারে। আমি এখানে একটি লিংক দিয়ে দিচ্ছি এখানে সেখান থেকে চেক করে নিতে পারেন আপনার কত টাকা খরচ লাগবে।

ফি হিসাব করতে এই লিংকে ক্লিক করুনঃ 

নিচের মত একটি ফরম আসবে। আপনার তথ্যগুলো দিন তারপর হিসাব করুন বাটুনে ক্লিক করুন। আপনার কত টাকা লাগবে দেখাবে।

NID Card Fee Calculation
NID Card Fee Calculation

কিভাবে আবেদন করব?

আপনার যদি এন আইডি কার্ডটি হারিয়ে থাকে বা নষ্ট হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে অনলাইনে আবেদন করে সেটা রি-ইস্যু করতে হবে। কিভাবে জাতীয় পরিচয় পত্রের ডুপ্লিকেট কপি উঠাবেন তার বিস্তারিত আমি এখানে দিয়ে দিচ্ছি।

থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়ে গেলে আপনি নিচের এই লিংকে ক্লিক করুন।

জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যুর আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন।

অতঃপর এমন একটি পেজ আসবে সেখানে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর এবং জন্মতারিখ এন্ট্রি করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

NID Re-Issue Registration
NID Re-Issue Registration

পেমেন্ট পরিশোধ করুনঃ

রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পর আপনার এনআইডি সংশোধনের জন্য 230 টাকা পেমেন্ট পরিশোধ করতে হবে। (কিভাবে পেমেন্ট পরিশোধ করবেন তা নিম্নে দেওয়া হল)

  • পেমেন্ট পরিশোধ করার জন্য প্রথমে আপনার মোবাইল থেকে রকেট অ্যাপস চালু করুন।
  • তারপরে বিল-পে অপশনে ক্লিক করুন।
  • বিলার আইডি হিসেবে 1000 টাইপ করুন।
  • এনআইডি নাম্বার লিখুন
  • কি কারনে পরিশোধ করছেন সেটি ড্রপডাউন মেনু থেকে সিলেক্ট করে দিন
  • অতঃপর আপনার মোবাইল নম্বর লিখুন।
  • অতঃপর বিল পে সম্পন্ন করে ফেলুন।
  • বিল পে সম্পন্ন হওয়ার পর অটোমেটিক আপনার নির্বাচন কমিশনের রেজিস্ট্রিকৃত একাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।
  • তারপর আবেদন করা শুরু করুন। 

রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়ে গেলে  রি-ইস্যু অপশন এর উপর ক্লিক করুন। নিচের চিত্র লক্ষ করুন।

জাতীয় পরিচয় পত্র রি-ইস্যুর জন্য আবেদন।
জাতীয় পরিচয় পত্র রি-ইস্যুর জন্য আবেদন।

অতঃপর যে পেজটি আসবে সেখানে ডান পাশে উপরের কোনা থেকে এডিট অপশনে ক্লিক করুন। এবার স্থানীয় থানা থেকে সাধারণ ডায়েরি করা ফরমটি থেকে, ১। জিডি নম্বর, ২। থানার নাম, ৩। জিডির তারিখ, ৪। কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের নাম, ৫। কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের পদবী লিখে ফেলুন। অতঃপর পেমেন্ট পরিশোধ করুন।

জাতীয় পরিচয় পত্রের ডুপ্লিকেট কপি ডাউনলোড করুন।
জাতীয় পরিচয় পত্রের ডুপ্লিকেট কপি ডাউনলোড করুন।
  • সম্পূর্ণ তথ্য ইনপুট করার পর “পরবর্তী” বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে
  • দ্বিতীয় ধাপে গেলে সেখানে আমরা যে টাকা ডিপোজিট করেছি সেটা দেখাবে এবং অপশন রেগুলার রেখে  পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে
  • অতঃপর তৃতীয় ধাপ এগিয়ে, আপনার সাধারণ ডায়েরি কপি আপলোড করতে হবে।
  • চতুর্থ ধাপ এগিয়ে ফাইনাল সাজেশন দিতে হবে।
  • অতঃপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি ডাউনলোড ফাইল চলে আসবে সেখানে ক্লিক করে আপনি আপনার রিসিভ টা ডাউনলোড করে রাখুন।
  • এখন আপনার কাজ শেষ পরবর্তী কাজ অফিসের জন্য


কত দিন সময় লাগবেঃ

এখন কথা হলো, আমি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি কমপ্লিট করলাম কিন্তু আমি কতদিন পরে কার্ড পাব? আপনার কার্ডটি সাধারণ পিরিয়ডের জন্য আবেদন করলে 3 থেকে 10 বিজনেস দিবসের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে অতঃপর আপনার মোবাইলে একটি মেসেজ চলে আসবে। যখন আপনার মোবাইলে মেসেজ চলে আসবে তখন আপনি বুঝবেন যে আপনার কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

কার্ড কিভাবে পাবোঃ

আপনার মোবাইলে যখন কনফার্মেশন মেসেজ চলে আসবে তখন আপনি আপনার ইউজার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে লগইন করে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। অথবা এই লিঙ্কে ক্লিক করুন  আপনার এন আইডি এবং পাসওয়ার্ড প্রবেশ করান। এবং একেবারে নিচে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করুন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র টি অটোমেটিকভাবে ডাউনলোড হয়ে যাবে। তারপর সেটাকে প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করে নিতে হবে।

সবশেষে আমাদের পরামর্শঃ

যেহেতু এই কাজটি একটি সেনসিটিভ বিষয়, তাই কাজটি করার আগে আগে ভালোভাবে প্রত্যেকটি অপশন বা প্রত্যেকটি সেকশন বুঝে নিতে হবে। ভালভাবে বুঝে তারপর কাজটি করুন আশা করি অবশ্যই আপনার কার্ডটি তিন থেকে 10 দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন।

বন্ধুরা যদি কোন পরামর্শের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট সেকশনে গিয়ে কমেন্ট করে জানাবেন এবং লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন